ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল হোসেন নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার ছয় জন শিক্ষার্থী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। জবানবন্দি শেষে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গ্রেফতার ছয় শিক্ষার্থী হলেন- পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল মিয়া; মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া; পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মো. মোত্তাকিন সাকিন এবং আল হুসাইন সাজ্জাদ, আহসানউল্লাহ ও ওয়াজিবুল আলম নামের তিন শিক্ষার্থী। তারা সবাই এফএইচ হলের আবাসিক ছাত্র।
বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই হলে তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা করেন শিক্ষার্থীরা। জানা গেছে, তোফাজ্জলকে আটকের পর গেস্টরুমে নিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। সেখানে তাকে রাত ১০টা পর্যন্ত দফায় দফায় মারধর করেন।
একপর্যায়ে তাকে ক্যান্টিনে বসিয়ে ভাতও খাওয়ানো হয়। এরপর পুনরায় মারধর করা হয়। রাত ১০টার দিকে হলের হাউস টিউটররা ঘটনাস্থলে গেলে রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করলে শিক্ষার্থীরা সেখানে রেখেই চলে আসেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই ঘটনা শাহবাগ থানায় অবহিত করলে পুলিশ মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। ঢামেক হাসপাতালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলে নিহতের মরদেহ তার স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ওই ঘটনায় ঢাবি কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর তদন্ত কর্মকর্তা ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থীকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করেন।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তোফাজ্জলকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করেছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জালাল আহমেদ। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত ছিলেন। একটি ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, জালাল আহমেদসহ হলের ৮-১০ জন শিক্ষার্থী তোফাজ্জলকে বেধড়ক মারধর করছেন।